বর্তমান প্রযুক্তির কারনে আমাদের লাইফ আরো সহজ হয়ে গেছে। আজকের দিনে স্মার্টফোন একটি অপরিহার্য বস্তুতে পরিণত হয়েছে। এর মাধ্যমে আমরা দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন কাজ করি এবং বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করি।
কিন্তু এর সুবিধার দিকে লক্ষ করে আমরা ভুলেই গেছি এর ক্ষতিকর দিকগুলো। অত্যাধিক মাত্রায় স্মার্টফোন ব্যবহার এর কারনে আমরা এক পর্যায়ে এর উপর আসক্ত হয়ে যাই। তখনই ঘটে যত বিপত্তি। অতিরিক্ত স্মার্টফোন ব্যবহার এর কারনে এক সময় আমরা স্মার্টফোনকে নিয়ন্ত্রণ করি না! বরং স্মার্টফোন আমাদের নিয়ন্ত্রণ করে।
প্রিয় বন্ধু, এই আর্টিকেলে স্মার্টফোনের কিছু ক্ষতিকর দিক তুলে ধরা হলো। সেইসাথে স্মার্টফোনের উপরে আসক্তি কমানোর কিছু উপায় দেওয়া হলো। যেগুলো প্রত্যেক স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর জানা দরকার।
স্মার্টফোন ব্যবহারে ক্ষতি
চোখ এর ক্ষতি
অতিরিক্ত স্মার্টফোন ব্যবহার এর কারনে আমাদের চোখের ক্ষতি হয়। সবসময় স্মার্টফোনের স্ক্রিনে দেখার কারনে আমরা চোখের পাতা খুব কম ফেলে থাকি যার ফলে চোখের ভয়ানক ক্ষতি হয়। তাছাড়াও ২০৫০ সাল আসতে আসতে পৃথিবীর অর্ধেক মানুষই মায়োপিয়া নামের একটি রোগে আক্রান্ত হবে। যে রোগে দুরের কোন কিছু স্পষ্ট দেখতে পাওয়া যায় না। আর এর জন্যও দায়ি থাকবে এই স্মার্টফোন।
স্মার্টফোন আমাদের ঘুম কেড়ে নিচ্ছে
স্মার্টফোন আমাদের ঘুম আসলেই কেড়ে নিচ্ছে। স্মার্টফোন এর কারনে এখন মানুষ অর্ধেক রাত পার করে ঘুমায়। শুধু কি অর্ধেক রাত! কেউ কেউতো সারা রাত স্মার্টফোনের পিছনে পার করে দেয়। ফল স্বরুপ, দীর্ঘদিন এমন টি করার জন্য অনেকেই অনিদ্রা রোগে ভুগতে থাকে। তখন আর শত চেষ্টা করলেও সহজে ঘুম আসে না।
স্মার্টফোন আমাদের স্বাস্থ্যহীন করে তোলে
উপরে জানলাম যে স্মার্টফোন আমাদের ঘুম কেড়ে নেয়। কিন্তু শুধু ঘুমই নয়, স্বাস্থ্যও কেড়ে নেয়। অনেক স্মার্টফোন ব্যবহারকারী রাতের অর্ধেক কিংবা সারারাত স্মার্টফোনের পেছনে পার করে দেয় এবং যার কারনে অনেকেই দুপুর ১২ টার আগে বিছানা ছাড়তে পারেনা। এর ফলে আমরা সকালের খাবার মিস করে যাচ্ছি। আর স্বাস্থ্যবিধিতে বলা আছে সকালের খাবার স্বাস্থ্যের জন্য অত্যান্ত প্রয়োজন।
নোমোফোবিয়া( Nomophobia) রোগ
স্মার্টফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার কারনে আপনার নোমোফোবিয়া রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে। Nomophobia শব্দটিকে ভাংচুর করে No Mobile Phobia পাওয়া যায় সহজ ভাষায় মোবাইল কিংবা স্মার্টফোন থেকে দুরে থাকার ভয়। এ রোগের কারনে মোবাইল রোগির এমন আপন হয়ে যায় যে, মোবাইল যদি কখনো বন্ধ হয়ে যায় তবে রোগি অস্থির/অধৈর্য/উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। এটা তখন অন্যান্য ক্ষতিকর দিককে ছাড়িয়ে যায়। নোমোফোবিয়ার কারনে মানসিক সমস্যা তৈরি হয় এবং এমনকি রোগি ডিপ্রেশনে ভুগে।
তো, এইছিল স্মার্টফোন এর কিছু ক্ষতিকর দিক। আশা করি এখন আপনি সচেতন হবেন। এখন আসুন স্মার্টফোন এর আসক্তি কমানো একটি উপায় জানাই।
স্মার্টফোনে আসক্তি কমানোর উপায়
স্মার্টফোনে আপনি যদি গুরুতর আসক্ত হয়ে পরেন তবে আপনাকে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিৎ। আর আমি মোটেও ডাক্তার না। তবে আমি আপনাকে একটি উপায় দিয়ে দিলাম।
Keep Me Out অ্যাপ
স্মার্টফোন এর উপর আসক্তি কমানোর জন্য এটা খুব দরকারি একটা অ্যাপ। এই অ্যাপটির চালু করার মাধ্যমে আপনি একটা নির্দিষ্ট সময়(আপনি যে সময় দিবেন) পর্যন্ত আপনার মোবাইল টি কোন ভাবেই চালাতে পারবেন না। অর্থাৎ ফোনটিকে লক করে দেন।
পদ্ধতি
প্রথমে এখান থেকে অ্যাপটি ডাউনলোড করুন। এবার Lock for থেকে these এ ক্লিক করে আপনি কত মিনিট ফোন থেকে দুরে থাকতে চান সেটা দিন। আপনি চাইলে ঘন্টা হিসেবেও সময় দিতে পারেন। এক্ষেত্রে ডান পাশের মিনিট অপশন থেকে সেটা ঘন্টা করে দিতে হবে। আরো ভালো ভাবে বুঝতে নিচের স্ক্রিনশট দেখুন।
এবার ওকে তে ক্লিক করুন সাথে সাথে ফোন এর স্ক্রিন বন্ধ হয়ে যাবে।
টিপস: প্রথম অবস্থায় ৩০ মিনিট সময় দিন, এর পরে অল্প অল্প করে সময় বাড়াতে থাকুন। এভাবে প্রাক্টিস করতে থাকুন। ইনশাল্লাহ উপকার পাবেন।
অ্যাপ এর একটি দরকারি সেটিং
সেটিংস থেকে Enable Emergency Calling অপশন টি চালু করে দিন। কারন অ্যাপটি চলাকালীন আপনি আপনার ফোন কিছুতেই চালাতে পারবেন না। এমনকি ফোন কলও করতে পারবেন না। কিন্তু এই সেটিং চালু করার মাধ্যমে আপনি তা পারবেন।
আমাদের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে রাখুন। আমাদের ফেসবুক গ্রুপেও জয়েন করতে পারেন।
Image: Thanks to Andrew Le for sharing their work on Unsplash.
Post a Comment