বাংলাদেশে সব যায়গায় ওয়াইফাই ইন্টারনেট নেই। এবং বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষই সেলুলার ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহার করে। সেলুলার ডেটা দিয়ে কখনোই মানুষ চাহিদা মতো ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারে না। কেননা বাংলাদেশে সেলুলার ডেটার দাম অনেক বেশি। তাই বলা যায় বাংলাদেশের সেলুলার ইন্টারনেট ডেটা অত্যন্ত মুল্যবান। যখন আপনি ইন্টারনেটে ব্যবহার করেন তখন প্রচুর ব্যান্ডউইথ খরচ করতে হয়। যার জন্য একজন সেলুলার ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর ডেটা অনেক তারাতারি শেষ হয়ে যায়। কিন্তু এই পোস্টে কয়েকটি অসাধারণ পদ্ধতি দেওয়া হলো যেগুলো যদি কেউ ফলো করে তবে অনেক ডেটা বাঁচানো সম্ভব। তো চলুন সেই পদ্ধতি গুলো সম্পর্কে সল্পমাত্রায় জেনে নেই।


ফোনের ডেটা সেভার ব্যবহার করুন 

অধিকাংশ ফোন ডিফল্ট ভাবে ডাটা সেভার ফিচার প্রদান করে। ফোনের এই ফিচার সেলুলার ডেটা বাঁচানোর জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই ফিচার টি কমবেশি সব ফোনেই নোটিফিকেশন প্যানেলে পাওয়া যায়। সেখান থেকে চালু করে দিলেই কেল্লা ফতেহ। ডাটা সেভার চালু করলে স্পেশাল পারমিশন ছাড়া কোন অ্যাপ তখন আর ব্যাকগ্রাউন্ডে ডেটা ব্যবহার করতে পারে না। 


ডেটা বাঁচাতে পারে এমন ব্রাউজার ব্যবহার করা 

ডেটা বাঁচাতে পারে এমন ব্রাউজারের অভাব নেই প্লে স্টোরে, সেই অ্যাপ গুলো ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন ব্রাউজার হিসেবে অপেরা মিনি ব্যবহার করা যেটা সেলুলার ডেটা বাঁচাতে অনের সহকয়তা করে। অপেরা মিনিতে আছে বিল্ট-ইন ডাটা সেভার ও এড ব্লকার টুল এবং অপেরা মিনি দিয়ে কোন ওয়েবপেজ ভিজিট করার সময় সেটা তাদের সার্ভার থেকে কমপ্রেস করা হয় এতেও অনেক ডেটা খরচের হাত থেকে বাঁচা যায়।


বিভিন্ন ডেটা হাংরি অ্যাপের পরিবর্তে সেগুলোর লাইট ভার্সন ব্যবহার করা অথবা সেই অ্যাপ গুলোর ব্যবহার কমিয়ে দেওয়া।

যেমন ফেসবুক, ইউটিউব এর কথাই বলি! এগুলো হলো ভার্চুয়াল জগতের রাক্ষস। সেলুলার ডেটাতে এগুলো ব্যবহার করেছেন তো মরেছেন। যেটা আমাকে আর নতুন করে বোঝাতে হবে না, আপনারাই আমার থেকে ভালো জানেন। এগুলো যেকোন লিমিটেড ডেটার বারোটা বাজিয়ে দিতে সক্ষম। এসকল অ্যাপের লাইট ভার্সন পাওয়া যায়। সেগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন ফেসবুক অ্যাপের পরিবর্তে ফেসবুক লাইট ব্যবহার করা যেতে পারে যা অনেক বেশি ডেটা সাশ্রয় করতে পারে। ইউটিউবের ক্ষেত্রে ইউটিউব গো ব্যবহার করতে পারেন। যেটা ইউটিউবের থেকে কম ডেটা ব্যবহার করে। অথবা ইউটিউব এর মতো স্ট্রিমিং সার্ভিস এর ব্যবহার কমিয়ে দিয়ে অনেক বেশি পরিমান ডেটা বাঁচানো যেতে পারে। 


ক্রোম ব্রাউজারের লাইট মোড ব্যবহার করা।

গুগল ক্রোম হলো আমাদের নিত্য দিনের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ব্রাউজার। যেটা দিয়ে আমরা আমাদের প্রয়োজনিয় সকল ওয়েবসাইট ভিজিট করি। এমন কি এই আর্টিকেলটিও হয়তো আপনি ক্রোম ব্যবহার করেই পড়তেছেন। গুরুত্বপূর্ণ এই ব্রাউজারের চমৎকার একটি ফিচার হলো এর লাইট মোড। ক্রোমের লাইট মোড ব্যবহার চালু করে অনেক বেশি ডেটা বাঁচিয়ে নিতে পারবেন যদি আপনি নিয়মিত একজন ক্রোম ব্যবহারকারী হয়ে থাকেন। ক্রোম এর লাইট মোড ক্রোম ব্রাউজার এর সেটিংস অপশনে পাওয়া যায়। যদি লাইট মোড খুজে না পান তবে ব্রাউজার টি আপডেট করে নিলেই পেয়ে যাবেন। 


কিউই ব্রাউজার ব্যবহার করা

ক্রোমের মতোই একটি ব্রাউজার হলো কিউই ব্রাউজার। শুধু কিউই ব্রাউজার আপনার ডেটা বাঁচাতে পারবে না। কিউই ব্রাউজারে গুগল ক্রোম এর এক্সটেনশন ইন্সটল করা যায়। ডেটা বাচাতে হলে একটি এক্সটেনশন ব্যবহার করতে হবে যেটার নাম “Block Image”। নাম দেখেই বুঝতে পেরেছেন এটার কাজ কি। এই এক্সটেনশনটি ওয়েবপেজের কোন ছবিকেই লোড হতে দেয় না। ব্যান্ডউইথ এর সবচেয়ে বেশি অপচয় করে ইমেজ। বুঝতেই পারছেন এই এক্সটেনশন কি পরিমাণ ডেটা বাঁচিয়ে দিবে। Kiwi Browser এর ডাউনলোড লিংক এখানে এবং এক্সটেনশন টির ডাউনলোড লিংক এখানে। 


ফায়ারওয়াল ব্যবহার করা

যখন আমরা ইন্টারনেট ব্যবহার করি তখন আমাদের দৃষ্টির আড়ালে অনেক অ্যাপ ডেটা ব্যবহার করে। মাঝে মাঝে যখন আমরা অনেক বেশি সময় ডেটা ব্যবহার করি কিংবা কখনো ডেটা কানেকশন বন্ধ করতে ভুলে যাই তখন কিছু অ্যাপ লুকিয়ে লুকিয়ে আমাদের ডেটার বারোটা বাজিয়ে দেয়। এই সমস্যার হাত থেকে বাঁচতে ব্যবহার করতে পারেন বিভিন্ন ফায়ারওয়াল অ্যাপ। ন্যানোব্লগে ইতিমধ্যে একটি ফায়ারওয়াল এর রিভিউ আছে সেটা দেখতে পারেন। তাছাড়াও প্লে স্টোরে যদি ফায়ার ওয়াল লিখে সার্চ করেন তবে অসংখ্য ফায়ারওয়াল অ্যাপ পেয়ে যাবেন।

1 Comments

Post a Comment

Previous Post Next Post